লালমনিরহাটের পুরাতন বাজারস্থ মেসার্স নরসিংদী বস্ত্রালয়ের মোঃ আবুল কাশেম কর ফাঁকি দেওয়ায় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশে তার ব্যাংক হিসাব জব্দ করেছে।
রাজস্ব বোর্ড (কর অঞ্চল রংপুর)-এর চিঠি সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের পুরাতন বাজার এলাকার মেসার্স নরসিংদী বস্ত্রালয়ের স্বত্ত্বাধিকারী মোঃ আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। দীর্ঘদিন কর না দেওয়ায় ৩টি মামলা তার বিরুদ্ধে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। চলতি অর্থ বছরে নতুন করে ৯লক্ষ ১১হাজার ৬শত ৩১টাকা কর ফাঁকির অভিযোগ পায় তার বিরুদ্ধে রাজস্ব বিভাগ। রাজস্ব বিভাগ (কর অঞ্চল রংপুর) গত মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) একটি আদেশে মোঃ আবুল কাশেমের সকল ব্যাংক হিসাব জব্দ করার নির্দেশ দেয়। যাহার নথি নং-ব্যাংক জব্দ/সাঃ ১০/২০২২-২০২৩। ঐ নির্দেশে মোঃ আবুল কাশেমের সকল ব্যাংক হিসেবে আর্থিক লেনদেন না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মোঃ আবুল কাশেম ৮০দশকে নরসিংদী থেকে লালমনিরহাট আসেন৷ সে সময় বাবুর হাট থেকে শাড়ি, লুঙ্গি এনে লালমনিরহাটের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি শুরু করেন। ৮০দশকের গোড়ায় বাংলাদেশের তৈরী পলেষ্টার থান কাপড় ভারতে ব্যাপক বাজার পায় লালমনিরহাট থেকে এসব থান কাপড় মোগলহাট, বালারহাট, গোরক মন্ডল, ফুলবাড়ী সীমান্ত দিয়ে চোরাই পথে ভারতে যাওয়া শুরু করে।
ব্যাপক লাভ ও চাহিদা থাকায় এই থান কাপড় নরসিংদী থেকে এনে পাইকারী দেওয়া শুরু করেন মোঃ আবুল কাশেম। এতে অল্প দিনে তার ভাগ্য ফিরে যায়। ৯০দশকের শুরুতে প্রথমে একটি কাপড়ের দোকান দিয়ে বসেন। তারপর তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। দোকান থেকে প্রতি রাতে শত শত বেল থান কাপড়, পলেষ্টার, গরদ, মশারির কাপড়সহ টাঙ্গাইল শাড়ি ভারতে পাঠিয়ে কোটি কোটি টাকা আয় করেন মোঃ আবুল কাশেম।
পুরাতন বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইস্টার্ন বার্মার পরিবেশক মতিয়ার রহমান মতি মৃত্যু বরণ করলে তার সন্তানদের কাছ থেকে তেলের পাম্পের ঐ জায়গা নাম মাত্র মূল্যে ক্রয় করে নেন। সেখানে একটি ইমারতের নীচে জেলার সবচেয়ে বড় কাপড়ের পাইকারী দোকান মেসার্স নরসিংদী বস্ত্রালয় পাশাপাশি মেসার্স নরসিংদী আয়রন নামে রড ও স্কাপের পাইকারি দোকান গড়ে তুলেন। পূর্ব থানাপাড়া উপজেলা রোডে ডুপ্লেক্স ৪তলা বাড়ী নির্মাণ শেষ হবার পথে। এছাড়া সাপটানা রোডে অতিথি ক্লিনিকের পাশে একটি বাড়ী, লালমনিরহাট বসুন্ধরা এলাকায় একটি বাড়ীসহ ঢাকায় ফ্লাট রয়েছে বলে আয়কর বিভাগের গোয়েন্দা শাখা জানতে পারে।
অল্প কিছু দিনের ব্যবধানে আয় বহির্ভূত অগাধ সম্পদের মালিক ব্যবসায়ী মোঃ আবুল কাশেম রাজস্ব ফাঁকি দিতে নানা পথ অবলম্বন করেছেন। অথচ দেশের অর্থনীতির ফুসফুস রাজস্ব আদায়। সরকারের কোষাগারে রাজস্ব জমা না দিয়ে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়। বিলম্বে হলেও দেশ বিরোধী এসব অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের চিহ্নিত করে সরকার কর ফাঁকি দেবার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করায় সাধারণ মানুষ স্বস্তি বোধ করছেন।